২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২০২৪ মেয়াদের নির্বাচন। নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে মিশা সওদাগর-জায়েদ খান ও কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেল। দুই প্যানেলেই রয়েছে তারকারদের সরব উপস্থিতি। ৪ শতাধিক ভোটারের মধ্যে রয়েছে অনেক তারকা ভোটার।
গত দুই মেয়াদের নেতৃত্ব দেওয়া মিশা-জায়েদ এবারও তারকা প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে তাদের করোনাকালীন শিল্পীদের সহায়তা নিয়ে। অনেকেই এটি ভিন্ন চোখে দেখছেন এবং সহায়তা নিয়ে করেছেন প্রশ্নবিত্ত। যা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
এবার সেসব সমালোচনার জবাব দিলেন আশির দশকের ঢাকাই সিনেমার দর্শকপ্রিয় নায়িকা রোজিনা।ভালো কাজের অবশ্যই প্রচার করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেউ যদি একটা ভালো কাজ করে তা অবশ্যই প্রচার করতে হবে। ভালো কাজের কেন প্রচার হবে না? আমার প্রচার দেখে আরও মানুষ অনুপ্রেরিত হবে। প্রচার না করলে আবার তারাই বলতেন- আমরা সব খেয়ে ফেলেছি, আত্মসাৎ করেছি৷ প্রচার করলেও দোষ আবার না করলেও দোষ। পুরো বিশ্ব ভালো কাজের প্রচার করে আসছে। যারা প্রচার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা হিংসা থেকে এগুলো বলেছেন৷ করোনার দুঃসময় যারা সহযোগিতা পেয়েছেন আমার মনে হয় না তারা মিশা-জায়েদকে ছেড়ে যাবে।
রোজিনা বলেন, করোনা মহামারির সময় আমরা দেখেছি- স্বামী স্ত্রীকে ফেলে গেছে, সন্তান মাকে ফেলে গেছে। কিন্তু মিশা-জায়েদ কাউকে ফেলে যায়নি। করোনায় আমাদের অনেক শিল্পী মারা গেছেন। তাদের পাশে কিন্তু মিশা-জায়েদই ছুটে গেছে নিজেদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে। করোনা রোগীকে নিজ কাঁদে উঠিয়েছিলেন তারাই। অন্য কেউকে যেতে দেখিনি। এন্ড্রু কিশোর শিল্পী সমিতির সদস্য না। কিন্তু জায়েদ রাজশাহী ছুটে গিয়েছিল শিল্পীর প্রতি ভালোবাসা থেকে। করোনা মহামারির সময় যখন নিম্ন আয়ের শিল্পীরা কাজহীন তখন শিল্পী সমিতি একাধিকবার তাদের সহায়তা করেছে।
মিশা-জায়েদ প্যানেলের দুই মেয়াদের কাজের প্রশংসা করে রোজিনা বলেন, চার বছর মিশা-জায়েদ নির্বাচিত হয়ে যেসব কাজ করেছে তা প্রশংনীয়। তবে ভুল-ক্রুটি হতেই পারে। মানুষই ভুল করে। ছোট ছোট ভুল করলেও অধিকাংশ কাজই ভালো করেছে তারা। জায়েদ চলচ্চিত্রকে ভালোবাসে। তার কোনো পিছুটান নেই। যার কারণে করোনার সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিল্পীদের জন্য রাতদিন কাজ করেছে। শিল্পের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এসব সম্ভব নয়।
রোজিনা আরও বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে শুনেছি বিপরীত প্যানেলের কেউ কেউ বলেছেন, বিজয়ী হলে তারা সিনেমা বানাবেন। বিগত দিনে আমরা অনেক শিল্পীই সিনেমা প্রযোজনা করেছি। আমরা তো পদে এসে সিনেমা নির্মাণ করিনি। আমার যদি শিল্পের প্রতি ভালোবাসা থাকে তাহলে শিল্পী সমিতিতে এসে সিনেমা নির্মাণ করব কেন? নিজে প্রযোজনা করে কাজ করতে পারি না? আবার বলেছেন- জয়ী হলে সরকারের সহযোগিতা নিয়ে সিনেমা করবে। শিল্পের প্রতি ভালোবাসা থাকলে পদে না এসেও এসব কাজ করা যায়৷ চেয়ারে বসে করবে এসব কথার মানে নেই। আমি যদি চলচ্চিত্রকে ভালোবাসি, সহযোগিতা করতে চাই তাহলে পদে না থেকেও করা যায়। তার জন্য গতিতে বসার দরকার হয় না৷
শিল্পী সমিতি হলো শিল্পীদের জন্য। এটি সিনেমা নির্মাণের জন্য না উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী আরও বলেন, সিনেমা নির্মাণ করা শিল্পীদের কাজ নয়। তবে যাদের অর্থ আছে তারা সিনেমা বানাবেন। তার জন্য শিল্পী সমিতির দরকার হয় না। শিল্পী সমিতি হচ্ছে শিল্পীদের সেবা করার জন্য৷ কেউ যদি মনে করেন সবাই মিলে সিনেমা নির্মাণ করবেন সেটি ভিন্ন বিষয়। তার সাথে শিল্পী সমিতির সম্পর্ক নেই৷