করোনায় বহু আপনজনের মৃত্যু দেখেছে বিশ্ব, অসামাজিক ভাবে সামাজিক দুরত্বে থাকতে থাকতে মানুষ হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরতে দেখেছে বিশ্ব। এখানেই থেমে ছিলো না করোনা মহামারী। এই রোগে আক্রান্ত প্রিয়জনদের সৎকারের ব্যবস্থা করা অনুমতিও ছিলো না সুস্থদেহের কারো। ঝুঁকি জেনেও তাই প্রিয়জনের অনতিদূরে অশ্রুসজল প্রার্থণা। দেশে দেশে তখন স্বাস্থবিধি মেনে ঘরে থাকার কঠোর নির্দেশনা যাকে বলে ‘লকডাউন’। বিশ্ব যখন এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি তখন বাংলাদেশে করোনায় ‘লকডাউনকে’ বিষয়বস্তু করে প্রথমবারের মতো সিনেমা নির্মাণ করলেন ‘আপন মানুষ’ খ্যাত পরিচালক শাহ আলম মন্ডল। লকডাউনে নিটোল প্রেমের গল্প ‘লকডাউন লাভস্টোরি’।
গত (১৮ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার ছিলো সিনেমাটির প্রিমিয়ার শো। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের প্রজেকশন হলে এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন, পিএএ। শাপলা মিডিয়া নিবেদিত শুভ কথাচিত্রের ব্যানারে প্রিমিয়ার দেখতে এদিন উপস্থিত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য দিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভুইয়া, ওসমানী মেডিকেল কলেজের ইএনটি বিভাগের প্রধান ডা. মনিলাল আইচ লিটু, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক নিজামূল কবীর, প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান এবং গোর’খ্যাত নির্মাতা ও অভিনেতা গাজী রাকায়েত।
চলচ্চিত্রে দেখা যাবে বৈশ্বিক মহামারী করোনা শুরু হওয়ার পর ইমন অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরে। ফিরেই মা, ভাই, ভাবী থেকে তাকে দূরে দূরে থাকতে হয়। এমনকি অসুস্থ মায়ের সাথে দেখা পর্যন্তও করতে পারে না। স্বভাবজাত নিয়মেই তাকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন পালন করতে হয়। এই সময়ে পাশের বাড়ীর মেয়ে রেহনুমা মোস্তফার সাথে পরিচয় হয়। দু’জনের মনে, মনে গভীর প্রেম জন্ম নেয়। কিন্তু কেউ তা প্রকাশ করেনা। হঠাৎ কয়েকদিন ধরে আকাশ ছন্দকে ছাঁদে দেখতে পায়না। এরপর গল্পের মোড় নেয় অন্য দিকে।
উপস্থিত বক্তারা করোনাকে উপজীব্য করে নিটোল প্রেমের গল্প হতে পারে এমন ভাবনার জন্য পরিচালক শাহ আলম মন্ডলকে ধন্যবাদ জানান। তারা বলেন, এটা অবশ্যই সাহসী পদক্ষেপ। এ সময় স্বল্প বাজেটে ছবিটি নির্মাণে পরিচালকের অভাবনীয় মন্সিয়ানার কথাও উল্লেখ করেন তারা।
সুদীপ্ত কুমার দাস তার বক্তব্যে বলেন, চমৎকার গল্প, সংলাপ এবং নির্মাণশৈলী। আমরা বলতে পারি আরো অ্যারেজমেন্ট দেখানো যেতে পারতো; কিন্তু যদি চিন্তা করি স্বল্প বাজেটে এরচেয়ে ভালো আর কী দেখাতে পারতেন নির্মাতা? তাই তাকে বাহবা না দিলে অন্যায় হবে।
এ চলচ্চিত্রে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক ইমন ও সংবাদপাঠিকা রেহনুমা মোস্তফা। সিনিয়র সাংবাদিক দুলাল খান তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ভালোর শেষ নেই। সিনেমাটি দেখে বোঝা গেছে নির্মাতার একাগ্রতা ছিলো। তার সেই একাগ্রতার প্রমাণ মেলে শিল্পীদের প্রকাশভঙিমার মধ্য দিয়ে। বিশেষ করে ইমনের কথা বলতেই হবে দারুন করেছেন।
পরিচালক শাহ আলম মন্ডল জানান চলচ্চিত্রটি খুব শিগগিরই অ্যাপস এবং প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।